সংযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি
(Consonant Cluster)
সংযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি বললে
আমাদের যুক্তব্যঞ্জন বা যুক্তবর্ণের কথা মনে আসে। কিন্তু যুক্তবর্ণ এবং সংযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি
(Consonant Cluster) এক জিনিস নয়। সোজা কথায় সংযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি
বলতে আমরা বুঝি, যদি পাশাপাশি অবস্থিত দুটো অসম ব্যঞ্জনধ্বনি নিঃশ্বাসের একই প্রয়াসে
উচ্চারিত হয়।
কিন্তু বাংলাতে লেখার সময় আমরা
যুক্তবর্ণ বা যুক্তব্যঞ্জন ব্যবহার করি। সব যুক্তবর্ণ সংযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি নাও হতে
পারে। যেমন-
১। ”স্পষ্ট” শব্দটির ধ্বনি
বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায় ব্যব্যস্বব্য-ব্যস্ব অর্থাৎ ”সপঅষটও” এখানে মাঝখানের -ষট সংযুক্ত
ব্যঞ্জনধ্বনি নয়। (ব্য= ব্যঞ্জনধ্বনি, স্ব= ম্বরধ্বনি)
২। “মিস্ত্রী” = ব্যস্বব্য-ব্যব্যস্ব
= মইসতরই। এখানে মাঝখানের –সত সংযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি নয়।
যুগ্মীভবন
(Gemination)
যুগ্মীভবন এবং সংযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনির
কাছাকাছি হলেও দুটো এক বিষয় নয়। যুগ্মীভবনের ক্ষেত্রে দুটি সমশ্রেণির ব্যঞ্জনধ্বনি
পাশাপাশি অবস্থান করে এবং নিশ্বাসের একই প্রয়াসে উচ্চারিত হয় না। এখানে পূর্ববর্তী
ব্যঞ্জনধ্বনি পরবর্তী ব্যঞ্জনধ্বনির তুলনায় দীর্ঘ হয়। যুগ্মীভবনকে অনেক সময় কেউ কেউ‘
ব্যঞ্জনধ্বনির দৈর্ঘের পরিমাপক হিসেবেও ব্যবহার করে থাকেন।
যুগ্মীভবন ও সংযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনির
পার্থক্য:
ক্র: নং |
সংযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি |
যুগ্মীভবন |
১। |
পাশাপাশি
দুটো অসম ব্যঞ্জন থাকে। |
পাশাপাশি
দুটো সমজাতীয় ব্যঞ্জন থাকে। |
২। |
নিশ্বাসের
একই প্রয়াসে উচ্চারিত হয়। |
নিশ্বাসের
বিচ্ছিন্ন প্রয়াসে উচ্চারিত হয়। |
৩। |
একাক্ষরিক |
দুই
আক্ষরিক |
৪। |
সংযুক্ত
ব্যঞ্জনধ্বনির ন্যূনতম জোড়ের সাহায্যে দুটি রূপমূলের অর্থগত পার্থক্য নির্ণয় সম্ভব
নয়। |
যুগ্মীভবন
ও অযুগ্মীভবনজাত শব্দের ন্যূনতম জোড়ের সাহায্যে দুটি রূপমূলের অর্থগত পার্থক্য নির্ণয়
সম্ভব। |
৫। |
সংযুক্ত
ব্যঞ্জনধ্বনি শব্দের প্রথমে, মধ্যে, শেষে গঠিত হতে পারে। |
যুগ্মীভবন
শুধু শব্দের মধ্যে বা শেষে গঠিত হয়। |
৬। |
পাশাপাশি
স্বরধ্বনি এবং ব্যঞ্জনধ্বনি উভয়ই অবস্থান করতে পারে |
পাশাপাশি
সবসময় দুটো ব্যঞ্জন ধ্বনি অবস্থান করে। |
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন